পদ্মা সেতুর নতুন টোল হার নির্ধারণ ২০২২

পদ্মা সেতুর নতুন টোল হার নির্ধারণ ২০২২-বর্তমান সরকারের সর্বোচ্চ সাফল্য হলো পদ্মা সেতু নির্মাণ। পদ্মা সেতু নির্মাণে বাংলাদেশের দক্ষিণ এবং পশ্চিমাঞ্চল সহ সারা দেশের যোগাযোগ ব্যবস্থা অনেক উন্নত হয়েছে।

এতে করে দক্ষিণাঞ্চল-পশ্চিম অঞ্চলের মানুষের ঢাকার সাথে যোগাযোগ অনেক সহজতর এবং অর্থনীতিতে অনেক ভূমিকা রাখবে।

পদ্মা সেতু নির্মাণ বাংলাদেশের জন্য একটি অনেক বড় সাফল্য অর্জন। আজকে আমরা এই নিবন্ধনে পদ্মা সেতুর টোল নির্ধারণ এবং কোন যানবাহনে কত টোল ভাড়া দিতে হবে তা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করব।

যে সকল বন্ধুরা পদ্মা সেতু দিয়ে বিভিন্ন যানবাহনের মাধ্যমে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চল সহ ঢাকার সাথে যোগাযোগ করতে চান তাহলে আপনাদেরকে অবশ্যই টোলের হার সম্পর্কে বিস্তারিত জানার প্রয়োজন পড়বে। সে সকল বন্ধুদের জন্য আমাদের আজকের এই নিবন্ধটি নির্ভুলভাবে সাজানো হয়েছে।

পদ্মা সেতুর নতুন টোলের হার সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে হলে আমাদের এই নিবন্ধটি শুরু থেকে শেষ অবধি ভালো করে অনুসরণ করুন।

পদ্মা সেতুর সাথে সংযুক্ত জেলা

বাংলাদেশের পদ্মা নদীর উপর নির্মিত একটি বহুমুখী সড়ক ও রেল সেতু। এর মাধ্যমে শরীয়তপুর ও মাদারীপুর জেলাকে মুন্সীগঞ্জের লৌহজংয়ের সঙ্গে সংযুক্ত করা হয়েছে।

পদ্মা সেতুর উদ্বোধন হয় কবে

পদ্মা সেতুর নির্মাণ কাজ শুরু হয়  ২০১৪ সালের ২৬ নভেম্বর থেকে। দীর্ঘ আঁট বছর ধরে এর নির্মাণ কাজ চালু ছিল। অবশেষে 2022 সালের 25 শে জুন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী বেগম শেখ হাসিনা সেতুটি উদ্বোধন করেন।

উদ্বোধনী দিনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজেই মাওয়া প্রান্ত দিয়ে টোল প্রদান করে প্রথমবারের মতো আনুষ্ঠানিকভাবে পদ্মা সেতুতে আরোহন করেন। ২৬ শে জুন থেকে জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত করা হয়।পদ্মা সেতু তে প্রথম দিনে টোল আদায় হয় ২ কোটি ৯ লাখ টাকা।

পদ্মা সেতুর দৈর্ঘ ও প্রস্থ

পদ্মা সেতু দুই স্তর বিশিষ্ট স্টিল ও কংক্রিট নির্মিত ট্রাসের এই সেতুর উপরের স্তরে চার লেনের সড়ক পথ এবং নিচের স্তরে একটি একক রেলপথ রয়েছে।

এই সেতুটি ৪২ টি পিলার ১৫০মিটার দৈর্ঘের ৪১টির স্প্যানের উপর নির্মিত। পদ্মা সেতুর দৈর্ঘ্য ৬.১৫০ কিলোমিটার এবং প্রস্থ ১৮.১০ কিলোমিটার।

মুন্সীগঞ্জের মাওয়া ও শরীয়তপুরের জাজিরা পদ্মা সেতুর সাথে সংযুক্ত হয়েছে। এর ফলে যেমন এই অঞ্চলের মানুষের যাতায়াত ব্যবস্থা অনেক সহজ হয়েছে এবং সেইসাথে বাংলাদেশের অর্থনীতিতে ও অনেক ভূমিকা রাখবে।

পদ্মা সেতুর টোল ও আয় ২০২২

বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয় ১৭মে বিভিন্ন পরিবহনের জন্য আলাদা আলাদা টুলের হার নির্ধারণ করে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে। কোন পরিবহনের জন্য টুলের হার কত নির্ধারণ করা হয়েছে তা এই নিবন্ধনে প্রকাশ করা হয়েছে।

পদ্মা সেতু নির্মাণ করতে খরচ হয়েছে ৩০ হাজার ১৯৩কোটি ৩৯ লাখ টাকা। পদ্মা সেতু দিয়ে 2022 সালে বাংলাদেশের 23 জেলায় প্রতিদিন 21 হাজার 300 টি যানবাহন চলাচল করবে যা 2025 সাল অব্দি 41 হাজার 600 যানবাহন চলাচল করবে। এতে করে যে টোল আদায় হবে তা দিয়ে সেতুর ব্যয় উঠে আসতে সময় লাগবে সাড়ে 9 বছর।

আরো পড়ুন>>>ইন্ডিয়ান ভিসা এপ্লিকেশন সেন্টার (আইভেক), বাংলাদেশ সকল ব্রাঞ্চের নাম-ঠিকানা-মোবাইল নাম্বার এবং হটলাইন নাম্বার

বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয় কর্তৃপক্ষকে আগামী ৩৫বছরে ৩৬ হাজার কোটি টাকা পরিশোধ করতে হবে। টোল থেকে আদায় কৃত অর্থ বেশিরভাগ দিয়ে ঋণ পরিশোধ করা হবে এবং বাকি অর্থ দিয়ে সেতু রক্ষণাবেক্ষণের কাজ করা হবে।

পদ্মা সেতুর নকশা

পদ্মা বহুমুখী সেতুর পুরো নকশাটি ইকওমের নেতৃত্বে আন্তর্জাতিক ও জাতীয় পরামর্শকদের একটি দল গঠন করেছে। বাংলাদেশের প্রথম বড় সেতু প্রকল্প যমুনা বহুমুখী সেতু প্রকল্পের ওপর বিশেষজ্ঞদের একটি আন্তর্জাতিক প্যানেল গঠিত হয়।

১১ সদস্যের বিশেষজ্ঞ প্যানেলের চেয়ারম্যান করা হয়েছে অধ্যাপক জামিলুর রেজা চৌধুরীকে। প্যানেলটি সেতুর নকশা ও বাস্তবায়নের বিষয়ে প্রকল্প কর্মকর্তা, নকশা পরামর্শদাতা এবং উন্নয়ন সহযোগীদের বিশেষজ্ঞ পরামর্শ প্রদান করে।

পদ্মা সেতুর নির্মাণ খরচ কত

পদ্মা সেতু নির্মাণে মোট ব্যয় হয়েছে ৩০ হাজার ১৯৩ দশমিক ৩৯  কোটি টাকা। এসব ব্যয়ের মধ্যে রয়েছে সেতুর অবকাঠামো নির্মাণ, নদী শাসন, সংযোগ সড়ক, জমি অধিগ্রহণ, পুনর্বাসন ও পরিবেশ, বেতন-ভাতা ইত্যাদি।

বাংলাদেশের অর্থ বিভাগের সঙ্গে সেতু বিভাগের চুক্তি অনুযায়ী সরকার ২৯,হাজার ৮৯৩ কোটি টাকা সেতু নির্মাণের জন্য ঋণ দিয়েছে। । সেতু কর্তৃপক্ষকে ৩৫ বছরের মধ্যে ১ শতাংশ হারে সুদ দিয়ে পরিশোধ করতে হবে।

পদ্মা সেতুর নতুন টোল হার নির্ধারণ ২০২২/The toll rate of Padma bridge is 2022

ক্রমিক

যানবাহনের নাম

টোল হার (টাকা)

০১

মটরসাইকেল

১০০ 

০২

কার/ জীপ

৭৫০

০৩

পিকআপ

১২০০

০৪

মাইক্রোবাস

১৩০০

০৫

ছোট বাস (৩১ আসন পর্যন্ত)

১৪০০

০৬

ছোট ট্রাক (৫ টন পর্যন্ত)

১৬০০

০৭

মাঝারি বাস (৩২ আসনের বেশি)

২০০০

০৮

মাঝারি ট্রাক (৫-৮ টন পর্যন্ত)

২১০০

০৯

বড় বাস (৩ এক্সেল)

২৪০০

১০

মাঝারি ট্রাক (৮-১১ টন পর্যন্ত)

২৮০০

১১

ট্রাক (৩ এক্সেল)

৫৫০০

১২

ট্রেইলার(৪ এক্সেল পর্যন্ত)

৬০০০

১৩ ট্রেইলার(৪ এক্সেলের অধিক)

৬০০০+প্রতি এক্সেল ১৫০০

পদ্মা সেতুর নির্মাণ করে কোন কোম্পানি

16 জুন 2014 তারিখে, পদ্মা সেতু নির্মাণের জন্য বাংলাদেশ সরকার এবং চায়না মেজর ব্রিজ কোম্পানির মধ্যে আনুষ্ঠানিকভাবে একটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। সর্বনিম্ন দরদাতা হিসেবে চীনা কোম্পানিকে পদ্মা সেতু নির্মাণের দায়িত্ব দেওয়া হয়।

আর্থিক প্রস্তাব আহ্বান করা হলে, শুধুমাত্র এই চীনা কোম্পানি আর্থিক প্রস্তাব জমা দেয়। সংস্থাটি চীন রেলওয়ে বিভাগের সাথে সংযুক্ত

2022 সালের এপ্রিল মাসে, সেতু বিভাগের অধীনে, কোরিয়া এক্সপ্রেসওয়ে কর্পোরেশন এবং চায়না মেজর ব্রিজ ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানি লিমিটেডকে ৫ বছরের জন্য পদ্মা বহুমুখী সেতুর রক্ষণাবেক্ষণ ও টোল আদায়ের জন্য বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষ নিয়োগ দেয়।

সম্পুর্ণ নিবন্ধটি পড়ার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।আশা রাখি নিবন্ধটি আপনাদের অনেক উপকারে আসছে বলে আমাদের দীর্ঘ প্রয়াস।নতুন সব তথ্য পেতে আমাদের পেজের সাথেই থাকুন।

 

Leave a Comment