স্বামী বিবেকানন্দের জীবনী

স্বামী বিবেকানন্দের জীবনী

স্বামী বিবেকানন্দের জীবনী

স্বামী বিবেকানন্দ ১৯৬৩ সালের ১২ ই জানুয়ারি কলকাতা শহরের একটি উচ্চবিত্ত হিন্দু পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন।স্বামী বিবেকানন্দের ডাক নাম ছিল বিলো, ভালো নাম নরেন্দ্রনাথ দত্ত। নরেন্দ্রনাথ দওের পিতার নাম বিশ্বনাথ দত্ত। স্বামী বিবেকানন্দের পিতা বিশ্বনাথ দত্ত ছিলেন উত্তর কলকাতার নামকরা আইনজীবী।স্বামী বিবেকানন্দের মাতার নাম ভুবনেশ্বরী দেবী। পেশায় তিনি ছিলেন গৃহিণী।

ইনি ভারতবর্ষের ইতিহাসে একযুগ পুরুষ। তারই মধ্যে একই সাথে মিশেছে ঈশ্বর প্রেম,মানবপ্রেম আর স্বদেশ প্রেম। তার জীবন ছিল মুক্তির সাধনা-সে মুক্তি জাতির সর্বাঙ্গীণ মুক্তির।অর্থনৈতিক, সামাজিক ও রাজনৈতিক সর্বক্ষেত্রেই মানুষ যেন নিজেকে সকল বন্ধন এর উর্দ্ধে নিয়ে যেতে পারে। সন্ন্যাসী হয়েও ঈশ্বর নয় মানুষ ছিল তাঁর অবাধ্য দেবতা।

নরেন্দ্রনাথ দওের জীবন সর্ব মানুষের কাছেই এক আদর্শ হয়ে আছে। উনবিংশ শতাব্দীর শেষ প্রান্তে দাঁড়িয়ে তিনি প্রথম উচ্চারণ করেছিলেন,ঈশ্বর নয় মানুষ।মানুষের মধ্যেই ঘটবে ঈশ্বরের পূর্ণ বিকাশ। তিনি যুগ-যুগান্তরের প্রথা ধর্মসংস্কার ভেঙে ফেলে বলে উঠেছিলেন আমরা অমৃতের সন্তান।

স্বামী বিবেকানন্দের আবির্ভাব কাল এমন একটা সময় হয় যখন বাংলার বুকে শিক্ষা,সাহিত্য,ধর্ম,সংস্কৃতি সর্বক্ষেত্রেই নবজাগরণের যুগ শুরু হয়েছিল। কলকাতার প্রতিষ্ঠিত শিক্ষিত সম্মানিত ব্যক্তিদের মধ্যে লেগেছিল আধুনিকতার ছোঁয়া। শুধু পড়ালেখাতেই নয় বক্সিং ও কুস্তিতেও তিনি ভালো খেলতেন।এছাড়াও তিনি ক্রিকেটও খেলতেন।

শিক্ষাজীবন

স্বামী বিবেকানন্দ বাড়িতে গুরু মহাশয়ের কাছে প্রাথমিক শিক্ষা শেষ করে ১৮৭১ খ্রিস্টাব্দে নরেন্দ্রনাথ দত্ত ইশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের মেট্রোপলিটন ইনস্টিটিউশনে ভর্তি হন । ১৮৭৯ খ্রিস্টাব্দে দত্ত পরিবার কলকাতায় ফিরে আসলে নরেন্দ্রনাথ দত্ত প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি হয়ে প্রবেশিকা পরীক্ষায় প্রথম বিভাগে উর্ত্তীন্ন হন।তিনি বরাবরই মাসের সেরা ছাত্র হিসেবে পরিচিত ছিলেন।

১৮৭৯ সালে প্রবেশিকা পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে নরেন্দ্রনাথ জেনারেল অ্যাসেম্বলি ইনস্টিটিউশনে এসে পড়ার জন্য ভর্তি হয়েছিলেন। সেখানকার অধ্যক্ষ ছিলেন ইয়ুলিয়ম হেস্টিং।ইউলিয়ম হেস্টিং এর সান্নিধ্যে এসে দেশ-বিদেশের দর্শনশাস্ত্রের প্রতি স্বামী বিবেকানন্দ আকৃষ্ট হয়েছিলেন।তার সহপাঠী ছিলেন ডঃ ব্রজেন্দ্রনাথ শীল।পরবর্তীতে  তিনি দেশের অন্যতম শ্রেষ্ঠ দার্শনিক হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছিলেন। যেটি পৃথিবীর মধ্যে সবথেকে বড় পাওয়া ছিল তার কাছে।

১৮৮০ সালে ঠাকুর রামকৃষ্ণ সিমলা পল্লীতে সুরেন্দ্রনাথ মিত্র বাড়িতে এসেছিলেন নরেন্দ্রনাথ। আর সেখানেই প্রথম রামকৃষ্ণের সাথে পরিচয় হয়েছিল নরেন্দ্রনাথের।নরেন্দ্রনাথের গান শুনে মুগ্ধ হয়ে ঠাকুর তাকে দক্ষিণেশ্বর যাওয়ার জন্য আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন। কিন্তু সময়ের ব্যবধানে নরেন্দ্রনাথের রামকৃষ্ণের কথা ভুলে যান।

কিছুদিন পর নরেন্দ্রনাথ যখন রামকৃষ্ণের কাছে যাতায়াত করতেন তখনও তিনি নিয়মিত ব্রাহ্মসমাজে যেতেন। কোন একদিন ঠাকুর রামকৃষ্ণ তাকে যখন স্পর্শ করেছিলেন তিনি মুহূর্তের মধ্যে নিজের চেতনা হারিয়ে ছিলেন ।তার কাছে এটাই মনে হয়েছিল যে তার সমস্ত সত্তা এক অনন্তের মধ্যে বিলীন হয়ে গিয়েছে।

সাফল্য অর্জন 

স্বামী বিবেকানন্দের আবির্ভাব কাল এমন একটা সময় হয় যখন বাংলার বুকে শিক্ষা,সাহিত্য,ধর্ম,সংস্কৃতি সর্বক্ষেত্রেই নবজাগরণের যুগ শুরু হয়েছিল। কলকাতার প্রতিষ্ঠিত শিক্ষিত সম্মানিত ব্যক্তিদের মধ্যে লেগেছিল আধুনিকতার ছোঁয়া।

তিনি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপে হিন্দু ধর্ম তথা ভারতীয় বেদান্ত ও যোগ দর্শন প্রচারে প্রথম ভূমিকা পালন করেছিলেন। তার রচিত গ্রন্থগুলোর মধ্যে  চিকাগো বক্তৃতা, রাজযোগ, জ্ঞানযোগ, হাভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় বেদান্ত, কর্মযোগ, ভারতে বিবেকানন্দ, ভাববার কথা, পরিব্রাজক, প্রাচ্য ও পাশ্চাত্য, বীরবাণী, মদীয় আচার্যদেব অন্যান্য।

বিবেকানন্দ গায়ক ও সঙ্গীতজ্ঞ ছিলেন তার রচিত বিখ্যাত গান দুটি হলো খন্ডন-ভবো-বন্ধন ও নাহি সূর্য নাহি জ্যোতি। 

ভারতে বিবেকানন্দ বীর সন্ন্যাসী উপাধি পান ভারতের তার জন্মদিনটি জাতীয়  যুব দিবস হিসেবে পালিত হয়। শুধু পড়ালেখাতেই নয় বক্সিং ও কুস্তিতেও তিনি ভালো খেলতেন। এছাড়াও তিনি ক্রিকেটও খেলতেন।

শেষ জীবন 

১৮৮৫ সালে ঠাকুর রামকৃষ্ণ গলার ক্যান্সারে অসুস্থ হয়ে  পড়েন। তাকে চিকিৎসার জন্য নিয়ে আসা হয়েছিল কাশীপুর উদ্যানবাটী তে। তখন নরেন্দ্রনাথ অনুভব করেছিলেন তীব্র ব্যাকুলতা, চাকরি ছেড়ে দিয়ে তিনি কাশীপুর উদ্যানবাটী দেশের অন্য ভক্তদের সাথে ঠাকুরের শ্রী চরণে আশ্রয় নিয়েছিলেন। অন্য বক্তারা প্রথম দিকে মাঝে মাঝে গৃহে যেতেন ধীরে ধীরে তাও  বন্ধ হয়ে যেতে থাকে। উদ্যানবাটি হয়ে উঠেছিল রাম কৃষ্ণ ভক্ত শিষ্যদের আশ্রম। রামকৃষ্ণ ১৮ জনকে সন্ন্যাস উদ্বোধন করেছিলেন। তারমধ্যে বিবেকানন্দ ছিল অন্যতম।

1886 সালের এপ্রিল মাসে স্বামী বিবেকানন্দ কে সাথে নিয়ে গভীর যাত্রা করেছিলেন রামকৃষ্ণ।সেখান থেকে গিয়েছিলেন বুদ্ধগয়ায়। সেখানে গিয়েই তার মধ্যে জেগে উঠেছিল বুদ্ধের মহামুক্তির তীব্র আকাঙ্ক্ষা।

বুদ্ধের মত মনুষ্য কে সকল যন্ত্রনা দুঃখ থেকে মুক্তির পথ দেখার জন্যই তার আবির্ভাব হয়েছিল।এখানে বৌদ্ধ সাত্তার মন্দিরে ধ্যানস্থ হয়ে গেলেন স্বামীজি। কিন্তু ১৮৮৮ সালের ১৫ ই আগস্ট গৃহত্যাগ করেন।

রামকৃষ্ণ চলে যাওয়ার পর স্বামীজীর মধ্যে ভারতবর্ষের সব মহাপুরুষদের সৎ গুনের পূর্ণ প্রকাশ ঘটেছিল। ১৮৮৮ সালে স্বামী বিবেকানন্দের ভারত পরিক্রমা শুরু হয়েছিল। দীর্ঘ পাঁচ বছর ধরে ভারতবর্ষের এক প্রান্ত থেকে আরেক প্রান্তে তিনি ঘুরে বেড়াতেন। স্বামীজি যখন যেখানে গিয়েছিলেন।

যারাই তার সান্নিধ্যে এসেছেন তাঁর ব্যক্তিত্ব,পাণ্ডিত্য সদ্য প্রসন্নময়ী মুখমন্ডলের দিকে চেয়ে সকলেই মুগ্ধ হয়েছিলেন। কোন একজন স্বামীজি স্বপ্নের মাঝে দেখছিলেন স্বয়ং রামকৃষ্ণ জনতাকে সমুদ্র পার হয়ে বিদেশ যাত্রায় ইঙ্গিত দিলেন।এটা দেখার পর তিনি কোনো এক কারণে আমেরিকা যাত্রা করেছিলেন। সেখানে গিয়ে স্বামীজি বিভিন্ন জায়গায় ঘোরার সুযোগ পেয়েছিলেন।

এই সুবাদে স্বামীজি দক্ষিণ চীনের রাজধানী ক্যান্টনমেন্টে ঘুরে এসেছিলেন।তার গভীর দৃষ্টি দিয়ে প্রত্যক্ষ করেন। চীনের মানুষের দুঃখ দূর্দশা। ১৯৮৬ সালের ১৬ ই  ডিসেম্বর তিনি ভারতের দিকে যাত্রা শুরু করেন। দীর্ঘ পাঁচ বছর বিদেশ যাত্রা শেষ হলো।

১৮৮৭ সালের ১৫ ই জানুয়ারি তিনি কলম্বো এসে পৌঁছান। তারপর ২০ জানুয়ারি কলকাতায় এসে পৌঁছান। সেদিন সমস্ত কলকাতা উত্তাল হয়ে উঠেছিল। কলকাতা তথা ভারতবর্ষের মানুষ সেদিন তাদের অন্তরের সব শ্রদ্ধা ভালোবাসা ও উজার করেছিল স্বামীজীর পদপ্রান্তে।

দেশে ফিরে এসে বিশ্রাম নেবার কোন অবকাশ পাননি স্বামীজি। তিনি নিজেও জানতেন দেশের মানুষকে জাগিয়ে তোলার জন্য যে গুরু দায়িত্ব তিনি গ্রহণ করেছেন সেখানে বিশ্রাম নেওয়ার মতো কোনো অবকাশ নেই তার। সুতরাং ৩০ কোটি ভারতবর্ষের উদ্ধারের ব্রত গ্রহণ করে তিনি সূচনা করে এবং তার সম্পূর্ণ করার প্রতিশ্রুতি নেন।

১৮৯৮ সালের ৯ই ডিসেম্বর  স্বামী বিবেকানন্দ গঙ্গার তীরে বেলুড়ে জমিতে শ্রী রামকৃষ্ণ মঠ স্থাপিত করেন। কিন্তু ১৮৯৮ সালে কলকাতায় প্লেগ রোগ দেখা দেয়।তাই স্বামীজি কলকাতায় ছুটে যান। শিশুদের নিয়ে অসুস্থ মানুষের সেবা করা শুরু করে দেন। রামকৃষ্ণের শিব জ্ঞানে জীব সেবার আদর্শ মূর্তি হয়ে উঠেছিল স্বামীজি।

১৯০১  সালের ৬ ই ফেব্রুয়ারি বেলুড় মঠের ইস ট্রাস্ট ডিড রেজিস্ট্রি হয়। ১০ ই ফেব্রুয়ারি মঠের ট্রাস্টিদের সর্বসম্মতিক্রমে স্বামী বিবেকানন্দ রামকৃষ্ণ মঠ ও মিশনের অধ্যক্ষ এবং স্বামী সারদানন্দ সাধারণ সম্পাদক হন।

স্বামীজি মঠের সমস্ত কাজকর্ম থেকে প্রকৃতপক্ষে নিজেকে সরিয়ে নিয়েছিলেন কিন্তু কেউ কোনো পরামর্শ চাইলে তিনি তাদের বুদ্ধি মত কাজ করার পরামর্শ দিতেন। অত্যাধিক পরিশ্রম আসামিদের স্বাস্থ্য ভেঙ্গে পড়েছিল।

যার কারণে স্বামীজি তাঁর ভক্ত শিষ্যদের খাওয়ার পর নিজ হাতে ধুয়ে দিয়েছিলেন।এজন্য একজন জিজ্ঞাসা করছিলেন আমরা কি আপনার সেবা গ্রহণ করতে পারি?স্বামী যে বলেছিলেন যিশু ও তার শিষ্যদের পা ধুয়ে দিয়েছিলেন। পরের দিন ১৯০২ সালের ৪ ঠা জুলাই সকাল থেকে উৎফুল্ল ছিলেন। 

সকলের সঙ্গে একসাথে খেয়ে সন্ধ্যার পর নিজের ঘরে ধ্যানে বসে পড়েন। রাত ৯ টা ৫০ মিনিটে সে ধ্যানের মধ্যে এই মহান ব্যক্তি মহা সমাধি তে ডুব দেন। স্বামী বিবেকানন্দ মাত্র ৩৯ বছর ৬ মাস বয়সে মৃত্যুবরণ করেন। বাস্তব জীবনে তিনি কখনো কোন মেয়ের সংস্পর্শেই যান নি। যার কারণে তিনি সন্ন্যাসী হয়ে সারা জীবন অতিবাহিত করেন।

বিশ্ব বিখ্যাত গ্রিক দার্শনিক সক্রেটিস এর জীবন বৃত্তান্ত ও ব্যক্তিগত জীবন জেনে নিন

বাটন মোবাইল দিয়ে জাভা গেম ডাউনলোড করার নিয়ম

সক্রেটিসের জন্ম 

সক্রেটিসকে (প্রাচীন গ্রিক ভাষায় Σωκράτης সক্রাত্যাস্‌) বলা হয়। গ্রিক দার্শনিক সক্রেটিসের জন্ম খ্রিস্টপূর্ব ৪৭০অব্দে গ্রিসের এথেন্স শহরে এলোপাকি গোত্রে।এই বিশ্ব বিখ্যাত দার্শনিক এর পিতার নাম  সফ্রোনিস্কাস  (Sophroniscus) এবং মায়ের নাম ছিল ফিনারিটি যিনি একজন ধাত্রী ছিলেন।

socretis 1

বাল্যজীবন ও কর্ম

পেশায় তিনি ছিলেন একজন স্থপতি।

স্বপ্নে নিকাশ বিভিন্ন ধরনের পাথরের মূর্তি বানিয়ে সেগুলো বিক্রি করতেন।

সক্রেটিসের মাতার নাম ছিল ফিনারিটি

পেশায় তিনি ছিলেন একজন ধাত্রি।

দুজনে দু পেশায় নিয়োজিত থাকলেও তাদের সংসারে অভাব-অনটন লেগেই থাকত।

এর ফলে এই মহান  দার্শনিক এ জীবন খুবই বিষময় হয়ে উঠেছিল।

যার ফলে তাঁকে পাথর কাটার কাজে যোগদান করতে হয়েছিল।

এই মহান দার্শনিকের জীবনী সম্পর্কে তথ্য লিখিতভাবে পেয়েছে কেবলমাত্র তার ছাত্র প্লেটোর এবং সৈনিক জেনো ফরেনের রচনা থেকে।

এই মহান দার্শনিক এর বাবা মার সংসারে যেহেতু অভাব লেগে 

থাকত সেহেতু তিনি বা কোন উপায় না পেয়ে একরকম বাধ্য হয়ে পাথরকাটার পেশায় নিজেকে আবদ্ধ করে নিয়েছিলেন।

কিন্তু অদম্য জ্ঞানস্পৃহা নিয়ে জন্মেছিলেন সক্রেটিস।

এর ফলে যখন যেখানে যেটুকু জানার সুযোগ পেতেন সেটুকু জ্ঞান সঞ্চয় করে নিতেন নিজের আয়ত্তে।

এমনি করে বেশ কয়েক বছর কেটে গিয়েছিল।

ছাত্র জীবন 

একদিন কোন এক ঘটনাচক্রে একজন ধনাঢ্য ব্যক্তির সাথে সক্রেটিসের পরিচয় হয়েছিল।

কথার সুবাদে সক্রেটিসের সাথে সেই ধনাঢ্য ব্যক্তির আলাপ হয়।

তিনি আলাপের মাঝে সক্রেটিসের ভদ্র মধুর আচরণে বুদ্ধিদীপ্ত কথাবার্তায় মুগ্ধ হয়ে তার পড়াশোনার দায়িত্ব নিয়ে নেন

সেই সুবাদে পাথরের কাজ সেরে সক্রেটিসকে  এনাক্সাগোরাস(Anaxagoras)নামে এক গুরুর কাছে ভর্তি হতে হয়।

কিছুদিন পর কোনো এক অজানা কারণে এনাক্সাগোরাস আদালতে অভিযুক্ত হলে সক্রেটিস আরখ ইখলাস এর শিষ্য পদ লাভ করেন।

সেসময় গ্রীস দেশ ছোট ছোট রাজ্যে বিভক্ত ছিল।

ফলে তাদের নিজেদের মধ্যে মারামারি,যুদ্ধ বিগ্রহ ও ক্ষমতার দ্বন্দ্ব লেগেই থাকত ।

এমতাবস্তায় দেশের প্রতিটি তরুণ,যুবক ,সক্ষম পুরুষদের যুদ্ধে যাওয়া বাধ্যতামূলক ছিল।

এজন্য সক্রেটিসকে এথেন্সের সৈন্য বাহিনীর সঙ্গে এ্যামপিপোলিস অভিযানে যেতে হয়।

কিন্তু এই যুদ্ধে সাহসিকতার জন্য সমস্ত যোগদান করে তার মন ক্রমশই যুদ্ধের প্রতি বিরূপ হয়ে উঠতে লাগলো।

তাই তিনি চিরদিনের মতো সৈনিকবৃত্তি পরিত্যাগ করে এথেন্সে ফিরে আসেন।

সেই সময় এথেন্স জ্ঞান-গরিমা,ব্যবসা-বাণিজ্য,শৌর্য,বীর্যে পৃথিবীর অন্যতম শ্রেষ্ঠ দেশ হিসেবে বিবেচিত হয়েছিল।

এই শিল্প-সাহিত্যকে সংস্কৃতির এক স্বর্ণযুগ হিসেবে পেয়েছিলেন তিনি।

এই পরিবেশে সক্রেটিস নিজেকে জ্ঞানের জগৎ থেকে দূরে সরিয়ে রাখতে পারেননি

সক্রেটিস মনে মনে প্রতিজ্ঞা করলেন যে তিনি জ্ঞানের চর্চায়,বিশ্বপ্রকৃতির জানবার সাধনায় নিজেকে উৎসর্গ করবেন।

সে সময়ে এতে যেহেতু শিল্প সাহিত্য ও সংস্কৃতির স্বর্ণযুগ ছিল 

সেহেতু সেখানে অনেকেই তাদের নিজেদের পাণ্ডিত্যের অহংকার ও বীরত্বের বড়াই করতেন।

সক্রেটিস তাদের উদ্দেশ্যে বলতো যে তারা বিরক্ত বলতে কী বোঝে?

পাণ্ডিত্যের স্বরূপ কি?

তারা যখন কোন কিছুর উত্তর দিত,

তখন তিনি আবারও প্রশ্ন করতেন।

প্রশ্নের পর প্রশ্ন সাজিয়ে বুঝিয়ে দিতেন তাদের ধারণা কত ভ্রান্ত।

মিথ্যা অহমিকায় কতখানি ভরপুর হয়ে আছে তারা।

এভাবে চলতে চলতে কোন এক সময়ে সেই সব লোক সক্রেটিসের উপর ক্ষুব্ধ হয়ে উঠে।

কিন্তু এই এই মহা দার্শনিক তাতে সামান্যতম বিকৃত বা চিন্তিত হয়ে পড়েন নি।

নিজের আদর্শ সত্যের প্রতি তার আস্থা ছিল অবিচল।

সেইসাথে ধন-সম্পদের  প্রতি তার চরম উদাসীনতা ছিল।

একবার তার বন্ধু এ্যালসিবিয়াদেশ তাকে বিরাট একখণ্ড জমি দিয়ে বলেছিলেন সেখানে বসবাস করতে

কিন্তু তিনি তা ফিরিয়ে দেন এবং বলেন “আমার প্রয়োজন একটি জুতা আর তুমি দিচ্ছে একটি বিরাট চামড়া এ নিয়ে আমি কি করবো জানিনা।”

এভাবে পার্থিক সম্পদের প্রতি নিঃষ্পৃহতা দার্শনিক জীবনে যত খানি শান্তি নিয়ে এসেছিল,

সক্রেটিসের বৈবাহিক অবস্থা 

তার সাংসারিক জীবনে ততখানি অশান্তি দিয়ে গিয়েছিল।

কিন্তু তার প্রতিও তিনি সমান নিঃষ্পৃহ ছিলেন।

এই মহা দার্শনিক এর স্ত্রীর নাম ছিল জ্যানথিপি(Xanthippe)।

এই জ্যানথিপি খুব রাগী এবং ভয়ঙ্কর মহিলা ছিলেন।

সাংসারিক ব্যাপারে সক্রেটিসের উদাসীনতা তিনি মেনে নিতে পারতেন না।

একদিন সক্রেটিস গভীর একাগ্রতার সাথে একটা বই পড়ে যাচ্ছিলেন সেই সময় তার স্ত্রী সক্রেটিসকে গালিগালাজ শুরু করে  দেন।

কিছুক্ষণ সক্রেটিস তার স্ত্রীর কথায় কর্ণপাত করেননি।

কিন্তু শেষ পর্যন্ত আর ধৈর্য রক্ষা করতে না পেরে বাইরে গিয়ে আবার বইটি পড়তে আরম্ভ করলেন।

সক্রেটিসের সেই রকম ব্যবহার তার স্ত্রী সহ্য করতে না পেরে এক বালতি পানি এনে তার মাথায় ঢেলে দিয়েছিলেন।

সক্রেটিস মৃদু হেসে বললেন,” আমি আগেই জানতাম যখন এত মেঘ গর্জন হচ্ছে তখন শেষ পর্যন্ত এক পশলা বৃষ্টি তো হবেই”

সুতরাং এ থেকে দেখা যায় এই মহান দার্শনিক খুবই ধৈর্যশীল একজন ব্যক্তি ছিলেন।

সক্রেটিসের দ্বিতীয় বৈবাহিক অবস্থা

জ্যানথিপি ছাড়াও সক্রেটিসের আরো একজন স্ত্রী ছিল যার নাম ছিল মায়ার্তো (Myharto)।

এই মহা দার্শনিকের দুই স্ত্রীর গর্ভে তিন সন্তান জন্ম নিয়েছিলেন দারিদ্রতা তাকে গ্রাস করলেও সন্তানদের ভরণ পোষণ ও শিক্ষার ব্যাপারে কোনো উদাসীনতা তিনি দেখান নি।

সক্রেটিস বিশ্বাস করতেন শিক্ষাই মানুষের শ্রেষ্ঠ সম্পদ।

শিক্ষার মধ্যেই মানুষের অন্তরের জ্ঞানের আগাম জ্যোতি উদ্ভাসিত হয়ে ওঠে।

সক্রেটিসের ধ্যান ও জ্ঞান

সক্রেটিস মনে করতেন যে জ্ঞানের মধ্যদিয়েই মানুষ একমাত্র সত্য কে চিনতে পারে।

যখন তার কাছে সত্যের স্বরূপ উদ্ভাসিত হয়ে ওঠে,

তখন সে মানুষটা আর কোনো পাপ করে না।

কেননা অজ্ঞানতা থেকেই সমস্ত পাপের জন্ম।

সমস্ত শয়তান মানুষের মনের সেই অজ্ঞানতাকে দূর করে তার মধ্যে বিচারবুদ্ধি বোধকে জাগ্রত করতে।

সব সত্যকে উপলব্ধি করে মানুষকে সাহায্য করাই ছিল সক্রেটিসের প্রধান লক্ষ্য।

সক্রেটিস আস্তিক ও নাস্তিক পদ্ধতির নাম দিয়েছিলেন।

পরবর্তীকালে তার শিষ্য প্লেটোর শিষ্য

তার শীষ্য প্লেটো এবং প্লেটোর শিষ্য এরিষ্টটল সেই ধারাকে সম্পূর্ণরূপে বিকশিত করেছিলেন তার ন্যায় শাস্ত্রে।

 বিচার ও মৃত্যু

সক্রেটিসের আদর্শকে দেশের বিভিন্ন মানুষ দেখেনি।

তারা সক্রেটিসের সম্বন্ধে ভ্রান্ত ধারণা অনুভব করল।

এ থেকে তারা সক্রেটিসের বিরুদ্ধে চক্রান্ত করলেন।

তাদের চক্রান্তে দেশের নাগরিক আদালতে সক্রেটিসের ঘোর বিরোধী অভিযোগ আনা হলো।

প্রচলিত দেবতাদের অস্তিত্ব অস্বীকার করে নতুন দেবতার প্রবর্তন করতে চাইছেন বলে শাসকচক্র সক্রেটিসের উপর এরকম অভিযোগ নিয়ে আসে।

আর দ্বিতীয় অভিযোগ হচ্ছে সমাজকে ভ্রান্ত পথে চালিত করছেন তিনি।

এই অভিযোগের বিচার করবার জন্য আলোচনার সভাপতিত্বে একজনের বিচারক মন্ডলী 

গঠিত হলো।

এ বিচারকমণ্ডলীর সামনে সক্রেটিস এক দীর্ঘ বক্তৃতা দিয়েছিলেন।

তিনি বলেছিলেন,

হে এথেন্সের অধিবাসীগণ,

আমার অভিযোগকারীদের বক্তৃতা শুনে আপনাদের কেমন লেগেছে জানিনা তবে আমি বক্তৃতার চমকে আত্মবিস্মিত হয়েছিলাম,

যদিও তাদের বক্তৃতায় সত্যভাষণের চিহ্নমাত্র নেই।

এর উত্তরে আমি আমার বক্তব্য পেশ করছি।

আমি অভিযোগকারীদের মত মার্জিত ভাষা ব্যবহার জানিনা আমাকে শুধু ন্যায়বিচারের স্বার্থে সত্য প্রকাশ করতে দেওয়া হোক।

দেশবাসীর বিরাগভাজন হলাম?

অনেকদিন আগে ডেলফির মন্দিরে দৈব বাণী শুনলাম তখনই আমার মনে হল এর অর্থ কি?

আমি তো জ্ঞানী নই তবে দেবী কেন আমাকে দেবীর কাছে নিয়ে গিয়ে বলব,

এই দেখো আমার চেয়ে জ্ঞানী মানুষ।

এভাবে সক্রেটিস আরো বিভিন্ন যুক্তি দিয়ে দেশবাসীদের কাছে তার মূল্যবান বক্তব্য পেশ করেছিলেন।

সবশেষে তিনি বলেছিলেন,

এতক্ষণ আমি ঈশ্বর এবং তোমাদের সামনে আমার বক্তব্য রাখলাম। 

এবার তোমাদের এবং আমার পক্ষে যা সর্বত্তম সেই বিচার হোক

বিচারে ২৮১-২২০ ভোটে সক্রেটিসকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়।

সেই সময় ক্রিটো নামের একজন ধনাঢ্য ব্যক্তি সক্রেটিসের বন্ধু ছিলেন।

তিনি কারারক্ষীদের ঘুষ দিয়ে অন্য দেশে পালিয়ে যেতে পরামর্শ দিয়েছিলেন কিন্তু সক্রেটিস বিশ্বাস করতেন যে দেশের প্রত্যেক নাগরিককে দেশের আইন শৃঙ্খলা মেনে চলা কর্তব্য। বিচারালয়ের আদেশ উপেক্ষা করে অন্য দেশে পালিয়ে যাওয়ার অর্থ আইনের প্রতি অসম্মান প্রদর্শন করা।

তাছাড়া তিনি পালিয়ে গেলে সকলের মনে এ ধারণা হবে যে সক্রেটিস সত্যি সত্যিই অপরাধী।

তাকে দোষী সাব্যস্ত করে বিচারকরা ঠিক কাজটি করেছেন।

মৃত্যুর দিন সকল শিষ্যরা একে একে উপস্থিত হলেন কারাগারে।

সক্রেটিস গোসল শেষ করে ফিরে এলেন।

সূর্য তখন পশ্চিমাকাশে ঢলে পড়েছে।

মুহূর্তে মৃত্যুদূতের মতো দাঁড়িয়ে এসে দাঁড়াল জেলের কর্মচারী।

গভীর বেদনা কাঁদতে কাঁদতে ঘোষণা করল সক্রেটিসের বিষপানের সময় হয়েছে।

কৃত বাইরে থাকা রাজকর্মচারীর দিকে ইঙ্গিত করতেই জল্লাদ বিষের পাত্র হাতে কক্ষে প্রবেশ করল।

সক্রেটিস হাসিমুখে সেই পাত্র নিজের হাতে তুলে নিয়ে বিশ পান করে।

৩৯৯ খ্রিস্টাব্দে এই মহান দার্শনিক সক্রেটিসের মৃত্যু হেমলক নামক এক বিষাক্ত পাতার  রস পান করার ফলে হয়।

মৃত্যুর পর এথেন্সের অবস্থা

এই মহান দার্শনিক এর মৃত্যুর পরে এথেন্স বাসীদের মধ্যে অনেক অনুশোচনা কাজ করতো এবং সেটি ভোলার জন্য অনেকে আত্মহত্যা  করেছিল আবার অনেককে পিটিয়ে মারা হয়েছিল আর কিছু লোক কে বিতারিত করা হয়েছিল দেশ থেকে।এথেন্স বাসীরা এই মহান দার্শনিক এর প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে এথেন্সে বিরাট মূর্তি প্রতিষ্ঠা করেন। প্রকৃতপক্ষে এই মহা বিজ্ঞানী সক্রেটিস পৃথিবীর প্রথম দার্শনিক ও

চিন্তাবিদ,যাকে তার চিন্তা দর্শনের জন্য মৃত্যুবরণ করতে হয়েছিল। সেই চিন্তার এক নতুন জগৎ সৃষ্টি হয়েছিল যা মানুষকে প্রতিনিয়ত উত্তেজিত করে চলেছে আজকের পৃথিবীতে।

সক্রেটিসের কিছু উক্তি

  • অপরীক্ষিত জীবন নিয়ে বেঁচে থাকা গ্লানিকর।
  • জ্ঞানের শিক্ষকের কাজ হচ্ছে কোনো ব্যক্তিকে প্রশ্ন করে তার কাছ থেকে উত্তর জেনে দেখানো যে জ্ঞানটা তার মধ্যেই ছিল।
  • পৃথিবীতে শুধুমাত্র একটি-ই ভালো আছে, জ্ঞান। আর একটি-ই খারাপ আছে, অজ্ঞতা।
  • আমি কাউকে কিছু শিক্ষা দিতে পারবনা, আমি শুধু তাদের চিন্তা করাতে পারব।
  • বিস্ময় হল জ্ঞানের শুরু।
  • টাকার বিনিময়ে শিক্ষা অর্জনের চেয়ে অশিক্ষিত থাকা ভালো।
  • বন্ধু হচ্ছে দুটি হৃদয়ের একটি অভিন্ন মন।
  • প্রকৃত জ্ঞান নিজেকে জানার মধ্যে, অন্য কিছু জানার মধ্যে নয়।
  • তুমি কিছুই জানোনা এটা জানা-ই জ্ঞানের আসল মানে।
  • যাই হোক বিয়ে করো। তোমার স্ত্রী ভালো হলে তুমি হবে সুখী, আর খারাপ হলে হবে দার্শনিক।
  • ব্যস্ত জীবনের অনুর্বরতা সম্পর্কে সতর্ক থাকুন।
  • আমাদের প্রার্থনা হওয়া উচিত সাধারণের ভালোর জন্য। শুধু ঈশ্বরই জানেন কীসে আমাদের ভালো।
  • সত্যিকারের জ্ঞান আমাদের সবার কাছেই আসে, যখন আমরা বুঝতে পারি যে, আমরা আমাদের জীবন, আমাদের নিজেদের সম্পর্কে এবং আমাদের চারপাশে যা কিছু আছে তার সম্পর্কে কত কম জানি।
  • সেই সাহসী যে পালিয়ে না গিয়ে তার দায়িত্বে থাকে এবং শত্রুদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে।
  • নিজেকে উন্নয়নের জন্য অন্য মানুষের লেখালেখিতে কাজে লাগাও এই জন্য যে অন্য মানুষ কিসের জন্য কঠোর পরিশ্রম করে তা তুমি যাতে সহজেই বুঝতে পারো।
  • সুখ্যাতি অর্জনের উপায় হল তুমি কী হিসেবে আবির্ভূত হতে চাও তার উপক্রম হওয়া।
  • তুমি যা হতে চাও তা-ই হও।
  • কঠিন যুদ্ধেও সবার প্রতি দয়ালু হও।
  • শক্ত মন আলোচনা করে ধারণা নিয়ে, গড়পড়তা মন আলোচনা করে ঘটনা নিয়ে, দুর্বল মন মানুষ নিয়ে আলোচনা করে।
  • বন্ধুত্ব করো ধীরে ধীরে, কিন্তু যখন বন্ধুত্ব হবে এটা দৃঢ় করো এবং স্থায়ী করো।
  • মৃত্যুই হল মানুষের সর্বাপেক্ষা বড়ো আশীর্বাদ।

 

উইলিয়াম শেক্সপিয়ারের জীবনী

উইলিয়াম শেক্সপিয়ারের জীবনী সম্বন্ধে প্রায়  অনেক কিছুই  অজানা  রয়েছে  অনেকের কাছে । আপনারা যারা এই বিখ্যাত  ব্যক্তিটির সম্পর্কে  কোন তথ্য সংগ্রহ করতে চান তাহলে আমাদের এই  পেজটি অনুসরণ করতে পারেন।

এই পেজে উইলিয়াম শেক্সপিয়ার এর জীবনে ঘটে যাওয়া অনেক জানা অজানা তথ্য  সংগ্রহ করে এখানে উপলব্ধ  করা হয়েছে। বিশ্বের ইতিহাসে উইলিয়াম শেকসপিয়র এক বিস্ময়।

সর্বকালের সর্বকালের  সর্বশ্রেষ্ঠ নাট্যকার ও ইংরেজ কবি যার সৃষ্টি সমন্ধে এত বেশি আলোচনা  হয়েছে তার অর্ধেকেরও অন্যদের নিয়ে হয়েছে কিনা সন্দেহ।

অথচ এই বিখ্যাত ব্যক্তিটির জীবনী সম্বন্ধে প্রায়  অনেক কিছুই  অজানা  রয়েছে  অনেকের কাছে।

আরো পড়ুনঃস্বামী বিবেকানন্দের জীবনী

উইলিয়াম শেক্সপিয়ারের জন্ম:

 ১৫৬৪ খ্রিস্টাব্দের ২৩  এপ্রিল এই মহান ব্যক্তি  জন্মগ্রহণ করেন। শেক্সপিয়ার  ইংল্যান্ডের ইয়র্কশায়ারের অন্তর্গত জীবন নদীর তীরে স্ট্রিটফোর্ড  শহরে এক দরিদ্র পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন জন্মগ্রহণ করেন।

শেক্সপিয়ার কে ইংরেজি ভাষার  সর্ব শ্রেষ্ঠ সাহিত্যিক এবং বিশ্বের একজন অগ্রণী নাটকের মনে করা হয়।

উইলিয়াম শেক্সপিয়ার কে লন্ডনের জাতীয় কবি এবং বার্ড অফ অ্যাভন নামেও অভিহিত করা হয়।শেক্সপিয়ার এর পিতার নাম জন শেক্সপিয়ার এবং মাতার আর নাম মেরি আর্ডেন।

 শেক্সপিয়ারের পিতা মাতা উভয়েই আর্ডেন পরিবারেরই ছিলেন।  শেক্সপিয়র “As you like it” নাটকে মায়ের নাম কে অমর করে রেখেছেন।

শেক্সপিয়র এর বৈবাহিক ও পারিবারিক  জীবন:

উইলিয়াম শেকসপিয়র ১৮ বছর বয়সে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। এই ইংরেজ কবির স্ত্রীর নাম ছিলেন  নাম ছিলেন “এ্যানি হাথাওয়েকে”। এ্যানি হাথাওয়েকে শেক্সপিয়ারের থেকে আট বছরের বড় ছিলেন। 

বিবাহের কয়েক মাসের মধ্যেই অ্যানি এক কন্যা সন্তানের জন্ম দেন। শেক্সপিয়ার ও অ্যানির সন্তানের নাম রাখা হয়েছিল “সুসানা”।

এর ২ বছর পরে এ্যানি আরো দুটি জমজ সন্তানের জন্ম দেন। ছেলে হ্যামলেট মাত্র ১ বছর বেঁচে ছিলেন। 

উইলিয়াম শেক্সপিয়ারের জীবনী

শেক্সপিয়ার কে সংসার নির্বাহের জন্য নানান কাজকর্ম করতে হতো।শোনা যায় তিনি একবার ক্ষুধার জ্বালা সহ্য করতে না পেরে  স্যার টমাসের একটা হরিণকে হত্যা করেছিলেন। 

গ্রেফতারী পরোয়ানা জারী এড়াতে তিনি পালিয়ে লন্ডনে আসেন। কিন্তু এই কাহিনী কতটা সত্য সে বিষয়ে এখনও জানা যায় নি। তবে যে কারণেই হোক তিনি স্টাডফোড ত্যাগ করে লন্ডনে শহরে আসেন। 

শেক্সপিয়ারের নাট্যজগৎ:

শেক্সপিয়র অচেনা শহরে এসে কাজের সন্ধান করতে থাকেন। এভাবে ঘুরতে ঘুরতে তিনি  পেশাদারী রঙ্গমঞ্চে সাথে পরিচিত হন। নাট্যজগতের সাথে তিনি প্রত্যক্ষ পরিচয়ই তার অন্তরের সুপ্ত প্রতিভার বীজকে ধীরে ধীরে অঙ্কুরিত করে তোলে।

 শেক্সপীয়র ১৫৯১ থেকে ১৫৯২ সালের তার নাটকের সুত্রপাত করেন। এই সময় তিনি তার ঐতিহাসিক   হেনরি ভি আই(V I) নাটকের তিন খন্ড রচনা  করেন।

এর পরের বছর তিনি তার লেখা বিখ্যাত নাটক রিচার্ড থ্রি নাটকের প্রকাশে অনেক সফলতা অর্জন করেন।

একদিন যিনি তুরস্কের করার মত স্টার্টফোর্ড ছেড়ে পালিয়ে এসেছিলেন, সেখানেই তিনি বিরাট এক সম্পত্তি কিনেছিলেন।

 ইতোপূর্বে লন্ডন শহরে একটা বাড়ি কিনে ফেলেছিলেন। ১৬১০ সাল পর্যন্ত তিনি এই বাড়িতে বসবাস করেছিলেন। 

শেক্সপিয়ার কবি ও সাহিত্যিক:

উইলিয়াম শেক্সপিয়ার পৃথিবীর সবচেয়ে বিস্ময়কর উত্তরন ঘটিয়েছেন। ক্ষুদ্র দিঘির মধ্যে এনেছেন সমুদ্রের বিশালতা।শেক্সপিয়রের কাব্য ভেনাস এবং অ্যাডোনিস।

শুধু নাটক নয়, কবি হিসেবেও তিনি পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ কবিদের অন্যতম। তার প্রতিটি কবিতায় এক অপূর্ব কাব্য দ্যুতিতে উজ্জল। 

উইলিয়াম শেকসপিয়র দুটি কাব্য এবং ১৫৪ টি কাব্য রচনা করেছেন।  মানুষের অন্তরে দেহগত কামনার  সাহিত্য তার প্রকাশ ঘটেছে রেনেসাঁর  উত্তর-পূর্বে।

একদিকে দেহগত কামনা অন্যদিকে মূর্ত হয়ে উঠেছে ভেনাস এবং অ্যাডোনিসে।রচনাকাল অনুসারে শেক্সপীয়রের নাটকগুলি তে প্রধানত চার ভাগে ভাগ করা হয়েছিল।

 ১৫৮৮-১৫৯৬ সাল পর্যন্ত প্রথম ভাগের বিস্তার করা হয়েছিল। 

শেক্সপিয়ারের বিখ্যাত  নাটক সমূহের নাম:

১ঃ রিচার্ড থ্রি

২ঃ কমেডি অব এররস 

৩ঃ টেমিং অফ দি শ্রু

৪ঃ রোমিও জুলিয়েট 

৫ঃ ট্রাজেডি-হ্যামলেট 

৬ঃ ওথেলো 

৭ঃ কিং লিয়ার 

৮ঃ ম্যাকবেথ 

 ৯ঃ জুলিয়াস সিজার 

উইলিয়াম শেকসপিয়রের শেষ পর্বে পাঁচটি নাটক  রচনা করেছিলেন। তার মধ্যে দুটি ছিল অসমাপ্ত আর আর তিনটি ছিল সমাপ্ত। এদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য দিক টেম্পেস্ট। 

শেক্সপিয়ারের কমেডিঃ

১ঃ কমেডি হল লাভস লেবার লস্ট

২ঃ দি টু জেন্টলম্যান অফ ভেরোনা

৩ঃ দিতে টেমিং অফ দি শ্রু

৪ঃ কমেডি অফ এররস 

৫ঃ এ মিড সামার নাইটস ড্রিম।

৬ঃ অ্যাজ ইউ লাইক ইট। 

উইলিয়াম শেক্সপিয়ারের জীবনী

এই নাটকগুলোর প্রতিটি চরিত্রই জীবন্ত প্রানবন্ত সজীবতায়  ভরপুর। এই নাটক কমেডি গুলোর মধ্যে হাসি কান্না সুখ-দুঃখের এক আশ্চর্য সংমিশ্রণ ঘটেছে। শেক্সপিয়রের উল্লেখযোগ্য জুলিয়াস সিজারের নাটকের মুখ্য চরিত্র ছিলেন সীজারম,ব্রুটাস এবং অ্যান্টনি।

উইলিয়াম শেক্সপিয়রের যৌনতা:

শেক্সপিয়ারের যৌনতা বিষয়টি বহুল বিতর্কিত বিষয়। কাব্যসুত্রে জানা যায়, তিনি তার থেকে বয়সে  ৮ বছরের বড় এমন একজনকে বিয়ে করেছিলেন। 

কিন্তু জানা যায় তিনি শুধু এখানেই  সীমাবদ্ধ ছিলেন না গবেষকদের মতে তিনি অারো একাধিক নারীর সঙ্গে মিলিত হয়েছিলেন।

এমন কি তার সমন্ধে এমনও কিছু শোনা যায় যে তিনি পুরুষ মানুষের প্রতিও যৌন আকর্ষণ অনুভব করতেন।

তবে তার ব্যাক্তিগত জীবনী সংক্রান্ত প্রত্যক্ষ ও নির্ভরযোগ্য তথ্য প্রমাণের স্বল্পতার কারণে এই তথ্য প্রকৃতিগতভাবে আনুমানিক।যাইহোক, প্রচলিত ধারণা অনুযায়ী  উইলিয়াম শেক্সপিয়র  ছিলেন উভকামি

SEXPIAR

শেক্সপিয়ারের শেষ জীবনী :

উইলিয়াম  শেক্সপিয়ার যে তারিখে জন্মগ্রহণ করেছিলেন অর্থাৎ ১৬১৬ সালের ২৩ এপ্রিল  তিনি  মৃত্যুবরণ করেন।

ধন্যবাদ,সম্পুর্ণ নিবন্ধটি পড়ার জন্য।এই রকম আরো জীবনী জানতে আমাদের পেজের সাথেই থাকুন।