সুইস ব্যাংক কি?ব্যাংকে হিসাব খোলার নিয়ম,একাউন্ট খুলতে কত টাকা লাগে,কি কি একাউন্ট খোলা যায়

সুইস ব্যাংকে একাউন্ট খুলতে কত টাকা লাগে-সুইস ব্যাংক কি? ব্যাংকে হিসাব খোলার নিয়ম,একাউন্ট খুলতে কত টাকা লাগে,কি কি একাউন্ট খোলা যায়-তা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করবো এই নিবন্ধনে।সুইস ব্যাংকের সব তথ্য জানতে সম্পুর্ন নিবন্ধটি অনুসরণ করুন।

সুইস ব্যাংক কি?

সুইচ ব্যাংক বলতে সুজারল্যান্ড এর যে কোন ব্যাংকে বুঝায়। এটি আসলে কোন একটি নির্দিষ্ট ব্যাংকে বুঝায় না। বরং এর মাধ্যমে ব্যাংকিং নেটওয়ার্ককে নির্দেশ দেওয়া হয়।

সুইস ব্যাংকের হিসাব ও অন্য আর একটি সাধারণ ব্যাংকের হিসাবের মতো।

তবে সুইচ ব্যাংকের এমন কিছু নীতি ও বৈশিষ্ট্য রয়েছে, যার কারণে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তের মানুষ সুইজারল্যান্ডের ব্যাংকের দিকে ঝুকছে।

দেশটির সব ব্যাংকে নিয়ন্ত্রণ করে সুইস ফেডারেল ব্যাংকিং কমিশন বা সুইজারল্যান্ডের কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

সুইস ব্যাংকে বিত্তশালীদের আগ্রহের কারণ

বিশ্বজুড়ে ধনী ব্যক্তিদের অর্থ সুইস ব্যাংকে রাখার আগ্রহের অন্যতম মূল কারণ দেশটির গোপনীয়তার নীতি। সুইজারল্যান্ডের আইনে ব্যাংকগুলো তাদের গ্রাহকদের তথ্য প্রকাশ করতে বাধ্য নয়।

টাকার উৎস তারা জানতে চায় না। সুইচ আইন অনুসারে একজন ব্যাংকার কখনোই কোন গ্রাহকের তথ্য প্রকাশ করতে পারেন না।

যুক্তরাষ্ট্রের বিচার বিভাগ আইন প্রয়োগকারী সংস্থা যেকোনো সময় ব্যাংক হিসেবের যাবতীয় তথ্য পেতে পারেন। বিশ্বের অধিকাংশ দেশের ব্যবস্থাটাই এমন। কিন্তু সুইজারল্যান্ডের ব্যাপারটা সম্পূর্ণ ভিন্ন।

সুইস ব্যাংক কি?ব্যাংকে হিসাব খোলার নিয়ম,একাউন্ট খুলতে কত টাকা লাগে,কি কি একাউন্ট খোলা যায়

ব্যাংকের কোন কর্মকর্তা কিংবা কর্মচারী কখনোই যেন কোন হিসাবের তথ্য যেন প্রকাশ করতে না পারেন, সেজন্য ১৯৩৪ সালে একটি আইন পাস করে সুইজারল্যান্ড।

সুইস ব্যাংকে অর্থ রাখার আরেকটি কারণ হলো কম ঝুঁকি। সুইজারল্যান্ড অর্থনীতি ও অবকাঠামো খুবই স্থিতিশীল।

একইসঙ্গে সুইচ ব্যাংকাররা খুবই দক্ষ ও গ্রাহকের অর্থ কিভাবে বিনিয়োগ করতে হবে,

সে ব্যাপারে ও তারা যথেষ্ট পারদর্শী। তাছাড়া সুইচ ট্রাকে পৃথিবীর অন্যতম স্থিতিশীল মুদ্রা হিসেবে বিবেচনা করা হয়।

সুইস ব্যাংকে হিসাব খোলার নিয়ম

যে কেউ চাইলে সুইচ ব্যাংকে হিসাব খুলতে পারেন। ১৮ বছর বয়সের যেকোনো প্রাপ্তবয়স্ক মানুষ সুইস ব্যাংকে একাউন্ট খুলতে পারেন।

সুইস ব্যাংকে হিসাব খুলতে বৈধ পরিচয়ের ব্যাপারে নিশ্চিত করার পাশাপাশি সমস্ত সম্পদের উৎস দেখাতে হবে।

বড় অংক ডিপোজিট করার ক্ষেত্রে অন্য ব্যাংক হিসাবের স্টেটমেন্ট দেখানোর প্রয়োজনও হতে পারে। এবং সেই টাকার উৎসেরও যথাযথ কাগজপত্র লাগতে পারে।

বিদেশীদের কে মূলত স্বশরীরে উপস্থিত হয়ে হিসাব খোলার জন্য আবেদন করতে হয়।

সুইস ব্যাংকে একাউন্ট খুলতে কত টাকা লাগে

এই ব্যাংকে অ্যাকাউন্ট খোলার জন্য একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ জমা রাখতে হয়। বিভিন্ন ব্যাংকে বিভিন্ন পরিমাণ অর্থ জমা রাখতে হয়।

সুইস ব্যাংকে হিসাব খোলার জন্য 5 লাখ ডলার বা প্রায় সাড়ে চার কোটি টাকা থাকতে হবে।যদি এই পরিমাণ অর্থ আপনার থাকে তাহলে আপনি একাউন্ট খুলতে পারবেন।

সুইস ব্যাংকে কি কি একাউন্ট খোলা যায়

অন্যান্য সাধারণ ব্যাংকের মতো এখানে চলতি হিসাব, সঞ্চয় হিসাব সহ বিভিন্ন ধরনের অ্যাকাউন্ট খোলা যায়।

তবে বিদেশি নাগরিকদের জন্য সুইচ ব্যাংক গুলো ইনভেস্টমেন্ট একাউন্ট খুলতে উৎসাহিত করে।

ইনভেস্টমেন্ট একাউন্ট খোলার নিয়ম

যিনি একাউন্ট খুলতে চান তিনি কিংবা তার প্রতিনিধিকে প্রথমেই সুইস ব্যাংকের যে কোন একটি শাখায় ভিজিট করতে হবে।

প্রতিনিধি পাঠালে প্রতিনিধি কিংবা যার নামে একাউন্ট তার তথ্য ব্যাংকে দিতে হবে।

অফিস বা নিজ প্রতিষ্ঠানের সত্যায়িত আইডি কার্ডের ফটোকপি, পাসপোর্ট এর ফটোকপি ব্যাংকের কাছে জমা দিতে হবে। কিছু ব্যাংক এই প্রক্রিয়া মোবাইলের মাধ্যমে করে থাকে।

ব্যক্তিগত একাউন্ট খোলার নিয়ম

এই অ্যাকাউন্ট খোলার ক্ষেত্রেও ব্যাংকের যেকোনো শাখায় ভিজিট করতে হবে।

একাউন্ট খোলার সময় ব্যক্তিকে অবশ্যই স্বশরীরে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র নিয়ে উপস্থিত থাকতে হবে।

একাউন্ট খুলতে কি কি যোগ্যতা লাগে?

যদি কেউ সুইস ব্যাংকে একটি নাম্বারড অ্যাকাউন্ট খুলতে চায়, তবে তাকে অবশ্যই উপস্থিত থাকতে হবে। এছাড়াও বেশ কিছু আনুষ্ঠানিকতা পূরণ করতে হয়।

নাম্বারড অ্যাকাউন্টে আপনাকে প্রথম অবস্থায় কমপক্ষে এক লাখ ডলার জমা করতে হবে।

এবং অ্যাকাউন্ট রক্ষণাবেক্ষণের জন্য আপনাকে বছরে 300 ডলার দিতে হবে।

আরো জানতে ভিজিট করুন>>>বিকাশ একাউন্ট খোলার নিয়ম,একাউন্ট খুলতে কি কি লাগে- ২০২২

সুইস ব্যাংকের গোপনীয়তা

ব্যাংক গ্রাহকদের তথ্য গোপন রাখাটাই সুইজারল্যান্ডের আইন। এ কারণে আফ্রিকা, দক্ষিণ আমেরিকা,এশিয়া সহ তৃতীয়  বিশ্বের দুর্নীতিবাজ, সামরিক-বেসামরিক, স্বৈরশাসক রাজনীতিবিদ এবং

উন্নত বিশ্বের বড় বড় ব্যবসায়ীদের অর্থ জমা রাখার জায়গা এই সুইস ব্যাংক।

অর্থ বা সম্পদ লুকিয়ে রাখার জন্য এর চেয়ে বড় জায়গা পৃথিবীতে নেই ।

কঠোর গোপনীয়তা কম ঝুঁকির কারণে বিশ্বের অধিকাংশ বিত্তশালী মানুষেই প্রথম পছন্দ হিসেবে বেছে নেয় সুইস ব্যাংকে।

সুইস ব্যাংকের গোপনীয়তার সুবিধা নিয়ে মানি লন্ডারিং নতুন কিছু নয় ।

তাই মানিলন্ডারিং এর সাথে জড়িত অনেকেই সুইস ব্যাংকে অর্থ পাচার করে থাকে বলে বিভিন্ন প্রতিবেদনে উঠে এসেছে। অপরাধীদের কালো টাকার গন্তব্য হচ্ছে সুইস ব্যাংক।

বিশ্বের ৮৬টি দেশের নাগরিকদের ব্যাংক একাউন্ট সম্পর্কে সেই দেশের সরকারকে জানাই সুইস ব্যাংক কর্তৃপক্ষ।

কোন কোন দেশের নাগরিক ওই ব্যাংকে একাউন্ট খুলেছে সে সম্পর্কে তথ্য দেয় সুইজারল্যান্ড ফেডারেট ট্যাক্স administrator। সেই তালিকায় রয়েছে বাংলাদেশ ও ইন্ডিয়ার নাম

সরকারি হিসেবের বাইরেও দামি একাউন্ট বা দামি সংস্থার মাধ্যমে অনৈতিকভাবে বিভিন্ন দেশের নাগরিকরা সুইস ব্যাংকে অর্থ রাখেন।

আবার এর বাইরেও প্রবাসীরা বৈধ ভাবে টাকা রাখেন। তাই এই হিসেব দেখে কালো টাকার পরিমাণ সম্ভব নয় বলছেন অর্থনীতি বিশ্লেষকরা।

তবে সুইস ব্যাংকে বাংলাদেশ ও ভারতীয়দের গচ্ছিত অর্থের পরিমাণ আগের সব রেকর্ড ভেঙে দিয়েছে।

সম্পূর্ণ নিবন্ধটি দেখার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।

আশা রাখি এই নিবন্ধ থেকে আপনি কিভাবে সুইস ব্যাংকে একাউন্ট খুলবেন, একাউন্ট খোলার জন্য কত টাকা জমা রাখতে হয় এবং কি কি অ্যাকাউন্ট খোলা যায় তা জানতে পেরেছেন।

আপডেট সব তথ্য পেতে আমাদের পেজের সাথে থাকুন।ধন্যবাদ!