ইসলামী ব্যাংক চেক লেখার নিয়ম-ইসলামী ব্যাংকের একজন গ্রাহক হয়ে থাকলে আপনাকে অবশ্যই চেক বই লিখতে হবে। আর চেক বই লেখার নিয়ম রয়েছে। নিয়ম মেনে চেক বই যদি না লিখে থাকেন তাহলে আপনারা পড়তে পারেন ঝামেলায়। তো সেই ঝামেলা এড়াতে এখনই আমাদের আর্টিকেলটি থেকে ইসলামী ব্যাংকের চেক লেখার নিয়ম শিখে নিন।
হ্যালো বন্ধুরা কেমন আছেন? আজকের নতুন আর্টিকেলে আপনাদের স্বাগতম। আপনার ইতিমধ্যে জেনে গেছেন আজকে আমরা ইসলামী ব্যাংকের চেক লেখার নিয়ম সম্পর্কে আলোচনা করতে চাচ্ছি।
প্রত্যেকটি ব্যাংকেরই চেক রয়েছে এবং প্রত্যেক ব্যাংকে চেক আলাদা আলাদা যা লেখার সময় অনেকেরই নানা রকম ঝামেলা হয়ে থাকে। তো সেই ঝামেলা থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য আজকে আমরা ইসলামী ব্যাংকের চেক লেখার নিয়ম সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করবো।
ইসলামি ব্যাংক চেক বই কি?
চেক বই হল একটি হস্তান্তরযোগ্য দলিল যার মাধ্যমে ব্যাংকের মালিক ব্যাংকের সাথে এবং অন্যান্য ব্যক্তির সাথে লেনদেন করতে পারে। ইসলামী ব্যাংকের চেক বই হল যে দলিল খানা দিয়ে ইসলামী ব্যাংক এবং ইসলামী ব্যাংকের গ্রাহকদের সাথে লেনদেন করা যায়। সেই হস্তরাতের যোগ্য দলিলকেই ইসলামী ব্যাংক চেক বই বলে।
ইসলামী ব্যাংক চেক বই
ব্যাংকের চেক বই প্রধানত তিন প্রকার। আপনি এই তিন প্রকারের চেক বই দিয়ে লেনদেন করতে পারবেন। নিচে চেক বইয়ের প্রকারভেদ সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো।
বাহক চেকঃ বাহক সেক হল এমন একটি চেক যে চেকের পাতায় প্রাপকের নামের পরপরই “বাহককে” শব্দগুলি লিখা থাকে এবং ব্যাংকে যখন এই চেক উপস্থাপন করা হয় তখন সাথে সাথেই এই বাহকের নিকট অর্থ পরিশোধ করা হয়। বাহক চেকের মাধ্যমে টাকা উত্তোলন করা খুবই সহজ। বাহক থেকে অতিরিক্ত স্বাক্ষর হিসেবে উলটা পেজে কোনরকম সাক্ষ্য করতে হয় না চেক লেখক কে। এই চেকটা দেখানোর মাধ্যমে ব্যাংক তৎক্ষণাৎ টাকা পরিশোধ করে দেয় বলে এই চেক যদি কখনো হারিয়ে যায় তাহলে আপনার উচিত হবে ব্যাংকে এই বিষয়ে অবগত করা।
হুকুম চেকঃ যে চেকের টাকা কোন নির্দিষ্ট ব্যক্তিকে অথবা তার আদেশ মতে অন্য কোন ব্যক্তি বা সংস্থানকে প্রদানের নির্দেশ দেওয়া হয়ে থাকে তাকে আমরা হুকুম চেক বলে থাকি । হুকুম চেক তখন বাপ থেকে রূপান্তরিত হয় যখন এই চেকের বিপরীত পাশে চেক লেখক তার একটি স্বাক্ষর প্রদান করে। হুকুম থেকে প্রাপকের নামের শেষে “অথবা আদেশ অনুসারে “কথাটি লিখা থাকে।
দাগ কাটা চেক দাগ কাটা চেক এমন একটি চেক যে চেকের উপরে সাধারণত বাম কোনায় এক প্রান্ত হতে অপর প্রান্তে দুটি সমান্তরাল রেখা টানা হয়। এই চেক আপনারা নির্দিষ্ট ব্যাংকে গিয়ে সরাসরি ভাংগাতে পারবেন না। এই চেক আপনাকে আদায়ের উদ্দেশ্যে নিজস্ব ব্যাংকে চেকটি জমা দিতে হবে।
ইসলামী ব্যাংক চেক লেখার নিয়ম
ইসলামী ব্যাংক চেক লেখার নিয়ম অত্যন্ত সহজ। আপনারা এখন ঘরে বসেই ইসলামী ব্যাংকের চেক লিখতে পারবেন। তো নিচে আমরা প্রত্যেকটি ধাপ আপনাদের মাঝে তুলে ধরলাম।
#ধাপঃ- ১
সর্বপ্রথম আপনারা চেকটি লক্ষ্য করলে দেখতে পারবেন উপরের দিকে <b>”DATE”</b> নামে একটা ফাঁকা ঘর রয়েছে। এই ঘরে আপনারা চেক ইস্যুকৃত দিনের তারিখটি উল্লেখ করবেন অর্থাৎ আপনি যেদিনে চেক টি লিখছেন তার তারিখ এখানে দিবেন।
#ধাপঃ- ২
এবার নিচের দিকে তাকালে নামে একটি ঘর দেখতে পারবেন। এখানে আপনারা যদি নিজে টাকা উত্তোলন করতে চান সেহেতু আপনার নাম দিতে পারেন। অন্য কারো দাঁড়ায় টাকা তোলাতে চাইলে সেই ব্যক্তির নাম দিতে পারেন।
#ধাপঃ- ৩
এর নিচে ” The sum of Taka ” ফাঁকা ঘরটিতে আপনি যত টাকা উত্তোলন করতে চান সেই টাকার পরিমান লিখে দিবেন এবং টাকার পরিমান অবশ্যই কথায় লিখবেন এবং এর শেষে “মাত্র ” কথাটি যুক্ত করে দিবেন।
#ধাপঃ- ৪
তার পাশে “Tk” ই ঘরটি দেখতে পারবেন। এই ঘরে আপনার উত্তোলন করতে চাওয়া টাকার পরিমান অংকে লিখুন।
#ধাপঃ- ৫
ডান দিকে নিচে চেক ইস্যু কারী ব্যক্তির জন্য একটি স্বাক্ষর রয়েছে এই ঘরে আপনি নিজের স্বাক্ষর প্রদান করুন।
নোটঃ আপনি যদি নিজে টাকা উত্তোলন না করে অন্য ব্যক্তির দাড়িয়ে টাকা উত্তোলন করতে চান। তাহলে অবশ্যই ” Pay to” ঘরে আপনি যার দ্বারা টাকা উত্তোলন করতে চান তার নাম লিখবেন এবং চেকের উল্টা পাশে অবশ্যই আপনার একটি স্বাক্ষর দিবেন।
ইসলামী ব্যাংকে চেক লেখার সর্তকতাঃ-
চেক প্রত্যেকটি লেখা স্পষ্ট ভাবে লিখবেন যেন বুঝতে কোনো কষ্ট না হয়।
চেকের লেখাতে কোন রকম কাটাকাটি যেন না হয় এই দিকে বিশেষ খেয়াল রাখবেন। </li>
চেকে টাকার পরিমাণ লেখার সময় অবশ্যই সজাগ থাকবেন। টাকা কথায় লেখার পর <b> “মাত্র”</b> কথাটি আর ইংলিশে যদি আপনি চেক লিখে থাকেন তাহলে <b> ” Only”</b> কথাটি ব্যবহার করবেন।
উদাহরণঃ- “দশ হাজার টাকা মাত্র” / “Ten Thousands Taka only”
চেক দেখার সময় তারিখের দিকে অবশ্যই লক্ষ্য রাখবেন কেননা একটি চেক ইস্যু করার পর 6 মাস পর্যন্ত ব্যাহত থাকে।
বহুল জিজ্ঞাসিত কিছু প্রশ্নোত্তর
ইসলামি ব্যাংক চেকের মেয়াদ কত দিন?
ইসলামী ব্যাংক থেকে মেয়াদ ছয় মাস থাকে। একটি চেক ইস্যু করার পর 6 মাস সেই চেকটি টাকা উত্তোলনের জন্য অব্যাহত থাকে।
ইসলামি ব্যাংকের প্রতিষ্ঠাতা কে?
ইসলামী ব্যাংকের প্রতিষ্ঠাতা মাওলানা মোহাম্মদ আব্দুর রহিম।
ইসলামি ব্যাংকিং সিস্টেম কেমন?
ইসলামী ব্যাংকিং সিস্টেম ইসলাম শরিয়া মোতাবেক পরিচালিত হয়।
পরিশেষে!
আজকে আমরা আলোচনা করলাম ইসলামী ব্যাংক চেক লেখার নিয়ম সম্পর্কে আশা করি আপনারা সবাই আমাদের আর্টিকেলটি পড়ে ইসলামী ব্যাংক চেক লেখার নিয়ম শিখে নিয়েছেন।
ইসলামী ব্যাংক সম্পর্কে যে কোন মতামত আমাদের কমেন্ট বক্সে জানাতে পারেন। তো আজকে এ পর্যন্ত দেখা হবে নতুন কোন আর্টিকেল নিয়ে এসে পর্যন্ত ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন।